টেস্ট পরীক্ষার মাত্র মাস খানেক আগে যখন মিতু খুব শান্ত ভাবে ধ্রুবকে বললো “এত দিন আমি তোমার সাথে অভিনয় করেছি। আমার আর এই রিলেশন টিলেশন একদম ভালো লাগছে না

টেস্ট পরীক্ষার মাত্র মাস খানেক আগে যখন মিতু খুব শান্ত ভাবে ধ্রুবকে বললো “এত দিন আমি তোমার সাথে অভিনয় করেছি। আমার আর এই রিলেশন টিলেশন একদম ভালো লাগছে না আর। প্লিজ আর ফোন দিও না আমাকে” তখন থেকেই ধ্রুবর চোখের সামনে হারাধন-নাগ-আজমল
-তপন সব তালগোল পাকিয়ে গেলো! এমনিতে খুব একটা খারাপ ছাত্র সে নয় কিন্তু গত দুইটা বছর যে মেয়েটা তার সব ভালোলাগাতে জড়িয়ে ছিলো তার হঠাৎ করে এভয়েড করতে শুরু করাটা আর তারপর এই বোম...
লেখা পড়া চাঙ্গে তুলে দিলো।
বিকেলে খেলার মাঠে ধ্রুব নেই। ধ্রুব নেই ভোরের কোচিং গুলোতে কিংবা কলেজের ক্লাস শেষের আড্ডায়। ধ্রুব কোথায়? ধ্রুব রুমে বসে গেইম খেলে পিসিতে। চোখ মুখ শক্ত করে বারান্দায় বসে বসে কাকপাখি দেখে। জীবনেও সিগারেটের ধারে কাছে যায় নি সে, ইচ্ছা করছে নাকমুখ দিয়ে গলগল করে ধোয়া বের করে ঘর বাড়ি ভরে ফেলে। ফেসবুকে মিতু তাকে ব্লক দিয়েছে- এত দিনের ভালোবাসাময় চ্যাট বক্সে নীল নামটা কালো অক্ষরে দেখে তার মনে হয় চিৎকার করে কাঁদে। প্রচন্ড কষ্ট বুকে নিয়ে সে তার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড সাদাতকে নক দেয়

“দোস্ত”

“হুম দোস্ত বল”

“এরকম কেন হলো?”

“তোকে তো বলেছি, আমি নিশিকে দিয়ে খবর লাগিয়েছি। সে মিতুর সাথে কথা বলেছে”

“আমার দোষ কি ছিলো?”

“কিছুই বলে নি। বাট আমি মনে হয় বুঝতে পারছি। মিতু ভয় পেয়েছে”

“কিসের ভয়?”

“তুই মাত্র কলেজে পড়িস। তোদের ফ্যামিলির অবস্থাও ভালো না। ফিউচার কি হবে কেউ জানে না। তাই সে আগেই সরে পড়েছে। মে বি বেটার অপশনের খোঁজে”

“বেটার অপশন? মিতু আমাকে প্রথম ভালোবাসার কথা বলেছিলো”

“সেটা ফার্স্ট ইয়ারের কথা। মোহ ছিলো। মেয়েরা খুব দ্রুত ম্যাচিউরড হয়ে যায় রে। আর সত্যি বলতে তোকে হয়তো ভালও বাসে নি। মোহ কেটে যাবার পর এতদিন সত্যিই হয়তো অভিনয় করে গেছে!”

“কিন্তু আমি তো বাসতাম। আমি এখন কি করবো? পড়াশুনায় একদম মন দিতে পারছি নারে...টেস্টে কি হবে?”

“দোস্ত তোকে একটা মজার কথা বলি?”
“কি?”

“আমার বড় ভাইটা স্কুল কলেজ লাইফে কোন মেয়ের সাথে কথাও বলতো না। ঢাকা মেডিকেলে চান্স পাবার পর এখন তাকে দেখে মাথা খারাপ। মাঝে মাঝে আমাকে বলে। যাস্ট ফেসবুকে মেয়েরা যা করে উনার জন্য! রিয়াল লাইফে তো বাদ দিলাম। আসলে নিজে কোথাও দাঁড়ালে তখন আর এসবের অভাবে হয় না”

“সত্যি?”

“হুম। আমিও তো সিঙ্গেল। আগে খারাপ লাগতো। এখন কিছু ভাবি না। কোথাও একটা ভর্তি হই। সব টাইম মত হবে”

“তাহলে আমি এখন কি করবো?”

“কষ্ট হবে, বাট চিন্তা কর এখন রেজাল্ট খারাপ হলে আমছালা সব যাবে। তুই ভালো কোথাও টিকে দেখিয়ে দে। মিতুর কানে পৌছানোর দায়িত্ব আমার। মেয়ে তখন এসে যদি তোকে আবার বাবু বাবু না ডাকে তো আমার নাম সাদাতই না!”
ধ্রুবের ভিতরে কিছু একটা নড়ে চড়ে গেলো। প্রচন্ড একটা ক্রোধ। জিদে তার মাথা গরম হয়ে গেলো। হুম, মিতুকে সে দেখিয়ে দিবে। ফিউচার, না? অকে, ফিউচার সে বিল্ড করবে। সাদাত কে অনেক গুলা থ্যাংকু দিয়ে আইডি ডিএক্টিভ করে সে তপন-হারাধনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। ফাইজলামি নাকি? কিসের বুয়েট কুয়েট সব ভেজে তামাতামা করে দিবে ধ্রুব...ধ্রুবকে
চিনে না...
বছর খানেক পর। বুয়েটের রেজাল্ট দিয়েছে। ধ্রুব বসে আছে উদ্ভাসের বেইলীরোড শাখায়। বরাবরই সব মডেলটেস্টে টপ র‍্যাংকের ছাত্র ধ্রুব কিভাবে দশের বাইরে গেলো সবাই অবাক। তের তম হয়েছে সে বুয়েটে। ধ্রুবর চারপাশে কে কি বলছে তার কানে ঢুকছে না। তার সারা শরীর কাঁপছে। কারণ তার হাতের মোবাইলে একটা ম্যাসেজ, সে জানে এটা মিতুর। নাম্বারটা সে চেনে। কিন্তু সে ম্যাসেজটা খুলে দেখবে না। দেখলেও রিপ্লাই দিবে না। ধ্রুবর প্রতিশোধ পর্ব শেষ হয়েছে। বাসায় গিয়ে সে এখন একটা শান্তির ঘুম দিবে, গত এক বছরে জমিয়ে রাখা সব ঘুম।

৪টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

same position face kortisi..jani na ki hbe...tbe future a amn kisu korai ok dekhay dita chai...doa koiren..

নামহীন বলেছেন...

সোহেল

নামহীন বলেছেন...

সোহেল

নামহীন বলেছেন...

সোহেল