একটি প্রতিবেদন।আমরা এবং আমাদের অবস্থান।সময় এসেছে পরিবর্তনের।


শুরু করছি পরম করুনাময় আল্লাহর নামে।সেই সাথে সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা।প্রতিনিয়ত ভালো থাকুন এই প্রার্থনা করছি।আজ লিখতে বসেছি সেই বিষয়ে যার অনুমতি আপনারা আমাকে দিয়েছেন।আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো তাতে অনেক ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে।আমি আমার নিজস্ব দৃষ্টিকোন থেকে সবকিছু লেখার চেষ্টা করেছি।ভুল হতে পারে এবং সে ভুল শোধরানোর দায়িত্ব আপনাদের।আমার এই লেখাটির মূল উদ্দ্যেশ্য হলো ইউরোপ তথা ইতালি কেন এত এগিয়ে আর আমরা ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনীময়ে যে দেশ স্বাধীন করলাম তা কেন আজ এত পিছিয়ে?শুরু করছি-

সামাজিক নিরাপত্তা

একটা স্বাধীন দেশের জন্য যে জিনিসটা প্রথম প্রয়োজন তা হলো সামাজিক নিরাপত্তা।এই সামাজিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকবে জননির্বাচিত সরকার কারন জনসাধারন তাদের নির্বাচিত করেছে শুধুমাত্র আপামর জনসাধারনের সেবা করবার জন্য।এটি নিয়ে দ্বিমত প্রকাশের কোন অবকাশ নেই।মানুষ চায় জীবনের নিরাপত্তা,সামাজিক নিরাপত্তা,মালের নিরাপত্তা এবং সু স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা।আমার দেশ,আমার মাটি,আমি ঘুরবো বুক ফুলিয়ে।কিন্তু তাকি আমরা পারি?আসুন জানি সামাজিক নিরাপত্তার কয়েকটি ধাপ।

স্বাস্থ্যখাত বা চিকিৎসা (ভারত) -









সামাজিক নিরাপত্তার প্রথম ধাপ হলো স্বাস্থ্যখাত।কারন মানুষ মাত্রই অসুস্থ্য হবে।সেক্ষেত্রে ভারতের মানুষ কতটুকু স্বাস্থ্যসেবা পায় (সরকারি ভাবে)তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।

ছোট্ট একটি দেশ কিন্তু ধারন ক্ষমতার চেয়েও অতিরিক্ত জনবিস্ফোরন প্রথম আঘাত করেছে স্বাস্থ্যসেবাকে।যেসব সরকারি হাসপাতাল আছে তাতে প্রয়োজনের তুলনায় আসন সংখ্যা সীমিত।দেখা গেলো ১০০ শয্যার একটি হাসপাতালে রুগীর সংখ্যা ৫০০।কারন একটাই জনবিস্ফোরন।এছাড়া রয়েছে ডাক্তারদের গাফিলতি,অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় সরকারি কর্মস্থল বাদ দিয়ে প্রাইভেট চিকিৎসা করা,গরীব মানুষকে মানুষ হিসেবে স্বীকার না করা,সর্বোপরি কঠোর কোন আইনের বাস্তবায়ন না থাকায় ডাক্তারদের ইচ্ছেমত যা খুশী তাই করা।একটা মানুষ গরীব হতেই পারে।কিন্তু তার পরিবারের কাছে তিনি অমূল্য সম্পদ কারন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি।তিনি বীনা পরিবার অচল।এই মানুষটির যখন ছোটখাটো কোন অসুখ হয় এবং সরকারিভাবে তেমন কোন চিকিৎসা না পেয়ে বিফল মনোরথে বাড়ীতে ফিরে আসেন এবং কিছুদিন পর সেই মানূষটির ছোট অসুখটি বড় কোন কিছুতে রুপান্তরিত হয় তখন ভিটে মাটি বিক্রি করে উচ্চ চিকিৎসার স্বার্থে বড় কোন শহরে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।এরপর মানুষটি বাঁচুক/মরুক সেটা বড় কথা নয় কিন্তু বাস্তুহারা এই পরিবারটির দায়ভার বহন করতে হয় দেশকেই কারন বাড়লো একজন হতদরিদ্রের সংখ্যা।

ছবিটি দেখে লজ্জায় চোখ নামানোর কোন অবকাশ আপনার নেই কারন এটা আমাদের দেশেরই বাস্তব চিত্র।গ্রাম অঞ্চলে এভাবেই একজন মুমূর্ষ রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।হাসি পায় শুনলে আমরা নাকি আধুনীক হয়েছি।কিসে আধুনীক হয়েছেন আপনি?কাপড়ে?কম্পিউটারে?আগে লাভ লেটার লিখতেন এখন মেইল করেন এটাতে?মানুষের মৃত্যুর খবর আর টেলিগ্রাম করে দিতে হয় না,মোবাইলেই দেয়া যায় এটাতে?আহ আধুনীকতা।আসুন আমরা শপথ নেই আরো আধুনীক হবো।
প্রেক্ষাপট বড়লোক মানে পয়সাওয়ালা।এরা দেশের সম্পদ।আঙ্গুলে ব্যথা হলেও যারা দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিকিৎসা সেবা নেয় তবে অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে।এখানে পয়সার খেলা।আপনার A থেকে Z পর্যন্ত চিকিৎসা হবে তবে তা অবশ্যই পয়সার বিনিময়ে।স্বাস্থ্য সেবা শুধু তাদের জন্য কারন তারা দেশের ভি,আই,পি নাগরীক।দেশের সব সুবিধা শুধু তাদের জন্য।একজন হতদরিদ্র মরলে একটি পরিবার যে দারিদ্রসীমার অনেক নীচে চলে যায় এটা না হয় তাও সহ্য করা যায় কিন্তু একজন পয়সাওয়ালা মরলে দেশ ও জাতীর যে অপূরনীয় ক্ষতি হয় তা সামাল দেয়া জাতির পক্ষে সম্ভব নয়।

স্বাস্থ্যখাত বা চিকিৎসা (ইতালি)-

প্রতিটি মানুষের জন্য ব্যক্তিগত চিকিৎসক আছে যা নির্বাচন করবেন আপনি।অর্থাৎ অমুক ডাক্তারকে আমার ভালো লাগে আপনার এই কথার প্রেক্ষিতে হাসপাতাল কত্রিপক্ষ আপনার জন্য সেই ডাক্তারকে নির্বাচন করে একটা কার্ড দিবে। আপনার যে কোন অসুবিধায় চলে যাবেন সেই ডাক্তারের কাছে কোন সমস্যা নেই।ডাক্তার আপনার সমস্যা শুনে প্রেসক্রিপশন দিবে যার বেশীর ভাগ অসুধই আপনাকে দেয়া হবে বিনামূল্যে।আর ডাক্তার দেখানো বাবদ আপনাকে কোন পয়সা দিতে হবে না ডাক্তারকে কারন আপনি যে কাজই করুন না কেন সরকারকে যে ট্যাক্স দেন ডাক্তার সেই ট্যাক্স থেকে তার পয়সা নিয়ে নিবে।আপনি জানতেও পারবেন না।অর্থাৎ আপনি আপনার কাজ থেকে যে ট্যাক্স সরকারকে পরিশোধ করেন তার কল্যানে চিকিৎসা ফ্রী।হয়তো দেখা গেলো আপনার ডাক্তার একজন হ্নদরোগ বিশেষজ্ঞ কিন্তু আপনার সমস্যা হলো চোখে।তখন আপনার ডাক্তার একটি কাগজের মাধ্যমে আপনাকে হস্তান্তর করবে হাস্পাতালের চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে।সেখানে সরকারী কিছু ট্যাক্স প্রদানের মাধ্যমে আপনি পাবেন উন্নত সেবা।ট্যাক্স সাধারনত বাংলাদেশী টাকায় তিন হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয় ।কিন্তু এর পরে যদি আপনার চোখ অপারেশন করতে হয় এবং বাংলাদেশী টাকায় ৫ লক্ষ টাকাও লাগে তাহলেও কিন্তু তা ফ্রী।অর্থাৎ আপনাকে আর কোন টাকা গুনতে হবে না।

উপরের ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একজন ডাক্তার কতটা দরদের সঙ্গে রোগীর খোঁজ খবর নিচ্ছেন।এবার আসছি চিকিৎসা সেবার অন্য কিছু অংশে।ধরুন আপনি আপনার বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ্য অনুভব করলেন।হয়তো দেখা গেলো আপনার বুকে ব্যথা অনুভব করছেন।ফোন করুন ১১৮ নাম্বারে।ব্যাস ৫ মিনিটের মধ্যে এসে হাজির হয়ে যাবে এ্যাম্বুলেন্স।

এখানে কোন পয়সার কারবার নেই।আপনি ইতালির যে কোন প্রান্তে,যত অজপাড়াগাঁয়েই থাকুন না কেন চিকিৎসা আপনার জন্য সমান।মানে রাজধানীতে বসে একজন নাগরিক যে সুবিধা ভোগ করবে ঐ গ্রামের মানুষটিও সেই একই সুবিধা ভোগ করবে।

তাহলে কথা এই দাড়ালো যে বীনা চিকিৎসায় মৃত্যুর হার ০% ।

সড়ক,যাতায়াত ও পরিবহন নিরাপত্তা (ভারত)-

চলমান এক আতঙ্কের নাম সড়ক।নির্বিচারে মানুষ হত্যা হয় যেখানে।৭১ এর পরে নির্দয়ভাবে এরকম গণহত্যা একমাত্র সড়ক দূর্ঘটনা দিয়েই সম্ভব হয়েছে।অথচ সবাই নির্বিকার।নেই কোন আইন,নেই কোন বিচার,নেই কোন পদক্ষেপ,নেই কোন চিন্তা।প্রতিদিন দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে।পরিবহন দিয়ে যদি এভাবে গণহত্যা চালিয়ে দেশের জনসংখ্যা কমানো যায় তবে এটাতো দেশ ও জাতির জন্য সুখবর।কি বর্বর আমরা।কি ভাবে সম্ভব যেখানে প্রতিদিন এভাবে গণহত্যা হচ্ছে সেখানে দেশের ১০০% লোক নির্বিকার?এখনো কি সময় আসেনি পরিবর্তনের?

ছবিটি দেখে নিজেই বলুন চালক কতটা বেপরোয়া ছিলো যে বাসের ডান পার্শ্বের পুরোটাই গায়েব হয়ে গেছে। এই বাসের যাত্রী আপনিও হতে পারতেন কিংবা আপনার কোন আপনজন।
সময় এসেছে ঘোড়ার লাগাম টানার।স্বাধীনতার পর প্রায় ৬০ বছর পার হয়ে গেছে।সামরীক থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক সরকারও এসেছে একাধীকবার।পরীবর্তন হয়েছে কিছু?গত ৫০ বছরে যারা এসেছে তারা সামান্য সড়কেরই নিরাপত্তা দিতে পারেনি,পুরো দেশের নিরাপত্তা দেবে কি করে?
নিমতউরিতে দেখলাম রাস্তার ধারে এক লোক পরে আছে যার মাথা থেকে গরু জবাই করলে যেমন রক্ত বের হয় তেমন রক্ত বের হচ্ছে।পাশে দাঁড়িয়ে আছে ২/৩ জন লোক।তারা দর্শক।প্রশ্ন হলো আপনার সামনে যদি এমন ঘটনা ঘটে আপনি কি করবেন? আপনি কি এ্যাম্বুলেন্সে কল করবেন?জানি করবেন না কারন আপনিও ত দর্শক হতে পছন্দ করবেন।আর আপনি কল করলেও যে এ্যাম্বুলেস এসে হাজির হবে তার নিশ্চয়তা কে দেবে?কারন এ্যাম্বুলেন্স যে আসবে সে প্রথম নিশ্চয়তা চায় তার তেল খরচের টাকা জনগনের মধ্য থেকে কে দেবে?
আসুন সড়ককে নিরাপদ হিসেবে ঘোষনা করি।কাজ কিন্তু আপনারও আছে।যখন দেখলেন আপনার বাসের ড্রাইভার বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে আপনি কিন্তু মনে মনে পুলক অনূভব করেন যে ব্যাটা ড্রাইভার একখান।কখনো কি বলেছেন ড্রাইভার সাহেব আপনি যা করছেন তা ঠিক নয়?বলেননি কারন লোক লজ্জা।আরে বলেই দেখুন না,বাসের ১০০% যাত্রির সমর্থন আপনি পাবেন।হিরো হতে ইচ্ছে করে না আপনার?বাসের সুন্দরী মেয়েটি তো তাহলে আপনাকেই দেখবে বাঁকা চোখে।মেয়েরা তো সত্যিকারের হিরোকেই পছন্দ করে,অনলাইনের হিরোকে নয়।আসুন কারন অনুসন্ধান করি কেন এই ভয়াবহতা।
প্রথম কারন হিসেবে দেখবো চালকের অদক্ষতাকে।কোন যোগ্যতার দোহাই দিয়ে একজন অদক্ষ চালক ড্রাইভিং লাইসেন্স পায় তা কারোরই জানা নেই।একজন দক্ষ ড্রাইভারের অধীনে ৪/৫ বছর গাড়ির হেল্পার হিসেবে কাজ করলে নাকি সেও দক্ষ চালক হয়ে যায়।সেও দাবীদার হয় গাড়ি চালাবার।আসলেই কি এটা হওয়া উচিৎ?মন্ত্রনালয় কোন পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়া কোন অযুহাতে এধরনের অদক্ষ হেল্পারকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয় তা বোধহয় কারোরই বোধগম্য নয়।যার পরিনাম অহরহ দূর্ঘটনা।

উপরের ছবিটি দেখুন,সামান্য কয়টা পয়সা বাচাতে গিয়ে নিজেই বিসর্জন দিচ্ছেন নিজের জীবনকে।নিজে সচেতন হোন,অন্যকে সচেতন করুন।
দ্বিতীয় কারন হিসেবে দেখবো রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ী চালালেও কোন জবাবদিহিতা না থাকা।না আছে কোন পুলিশ কন্ট্রোল,না আছে কোন বাঁধা।চালক নিজে মাদক জাতীয় কিছু সেবন করেছেন কি না তার নিশ্চয়তা কে দিবে?জানার আছে কোন ব্যবস্থা?না নেই।বাস কিংবা ট্রাক যারা চালায় তারা তো রিক্সা,সিএনজি কিংবা মটরসাইকেল চালককে মানূষ হিসেবেই গন্য করতে চায় না মহাসড়কগুলোতে।
তৃত্বীয় কারন হিসেবে দেখবো আত্মসন্মানবোধকে।অমুক কোম্পানীর গাড়ি আমার কোম্পানীর গাড়িকে ওভারটেক করে গেলো এটা কি হতে পারে?নাহ কক্ষনো না।শুরু হয় প্রতিযোগীতা।এ প্রতিযোগিতায় আত্মতৃপ্তি পায় যাত্রীরা নিজেও।পরিনাম যা হবার তাই হয়।হয় সেই গাড়ির নীচে পরে জীবন হারায় সাধারন মানূষ আর না হয় গাড়িটিই সড়ক থেকে ছিঁটকে পড়ে হয়ে যায় একরত্তি লোহার টুকরো।ভিতরের মানুষগুলোর অবস্থা নাই বা বললাম।

সড়ক,যাতায়াত ও পরিবহন নিরাপত্তা (ইতালি)-

আপনি যদি দূরের যাত্রী হন তবে নাক ডেকে একটা ঘুম দিতে পারেন কারন বাস জীবনেও এখানে এক্সিডেন্ট করে না।কারনটা হলো বাসের ড্রাইভার গতিবেগ মেনে চলে,সিগন্যাল মেনে চলে,রাস্তায় যা যা করতে নিষেধ করা হয়েছে তা মেনে চলে,নেশা করে না,প্রতিযোগীতা নেই বরং এক ড্রাইভার পাশে অন্য ড্রাইভারকে পেলে কুশল বিনিময় করে আর সর্বোপরি এদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার সময় স্পেশাল কিছু ট্রেনিং এর মাধ্যমে লাইসেন্স দেয়া হয়।যা ও ২/১ টি এক্সিডেন্ট হয় তা প্রাইভেটকারের মধ্যে।এই ২/১ টি এক্সিডেন্টও যেন না হয় তার জন্য সরকার নিয়েছে নানামুখী পদক্ষেপ।আমি যখন ২০০৫ সালে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাই তখনও বেশ সহজ ছিলো।কিন্তু কিছু এক্সিডেন্টের কারনে সরকার এখন এত বেশী কড়াকড়ি আরোপ করেছে যে আমার মত বিদেশী তো দূরের কথা,স্বয়ং ইতালিয়ানরদের এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়।এখন পরিস্থিতি এমন যে আপনি যদি ১০০% যোগ্যতা অর্জন করতে না পারেন তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স আপনার জন্য স্বপ্নই থেকে যাবে।৩/৪ বছর আগেও ইতালিতে মদ খেয়ে গাড়ি চালানো সম্ভব ছিলো কিন্তু এখন তা পুরোপুরি নিষেধ।পুলিশ আপনাকে ধরলে প্রথমে আপনাকে স্যালুট করবে।এরপর দেখতে চাইবে আপনার ডকুমেন্টস।এরপর দেখতে চাইবে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স।এরপর গাড়ির কাগজ।সবকিছু ঠিক থাকলে এরপর আপনাকে তাৎক্ষনিক একটা টেস্ট দিতে হবে যে আপনি মদ পান করেছেন কি না।

দেখুন পুলিশ যখন কন্ট্রোল করে তখন কিভাবে করে।ফাসানোর কোন উপায় নেই।

এখানে দেখুন মিউনিসিপ্যাল পুলিশ কি ভাবে ছোট্ট মেশীনের মাধ্যমে চালক মদ সেবন করেছে কি না তা তাৎক্ষনিক ভাবে পরীক্ষা করছে স্বয়ংক্রিয় মেশীনের সাহায্যে।
এবার আপনিই বলুন এত কড়াকড়ির মধ্যে কে আইন অমান্য করতে চায়?যখন কোন ব্যক্তি নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পায় তখন তার থাকে ২০ পয়েন্টস।এই ২০ পয়েন্টেসের মধ্যে মদ সেবন করে গাড়ি চালালে ১০ পয়েন্টস কাটা যাবে।দ্রুত গতিতে গাড়ি চালালে আরো ৫ পয়েন্টস,পঙ্গুদের জন্য নির্ধারীত জায়গায় গাড়ি পার্কিং করলে ২ পয়েন্টস।এভাবে বিভিন্ন নিষেধ অমান্য করলে আপনার সবগুলো পয়েন্টস কাটা যাবে এবং আপনাকে আবার নতুন করে স্কুল করে নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে।সহজ কথা নয়।কে চায় এত ঝামেলায় যেতে?এরক্সেয়ে অনেক সহজ আইন অনুযায়ী গাড়ি চালানো।
এবার আসুন দেখি গতিবেগ নিরুপনের কিছু চিত্র।

উপরের ছবিতে দেখুন পুলিশ কিভাবে টেলিক্যামেরার মাধ্যমে গাড়ির গতিবেগ কন্ট্রোল করছে।আপনি অনেক দ্রুত গাড়ি চালিয়ে গেলেন কিন্তু তা অত্যাধুনীক টেলিক্যামেরায় রেকর্ড হয়ে থাকবে আপনার গাড়ির গতি কত ছিলো।পরে পুলিশ কন্ট্রোলরুম থেকে আপনার গাড়ির নাম্বার দেখে সময় মত আপনার বাড়িতে চিঠি পাবেন যে অমুক দিন,এতটার সময়,অমুক রাস্তায় আপনার গাড়ির গতিবেগ এত ছিলো যার কারনে আপনাকে এত ইউরো জরিমানা এবং ৫ কিংবা ১০ পয়েন্টস মাইনাস করা হলো।আই্ন কাকে বলে দেখুন।

উপরের ছবিতে দেখুন পুলিশ তার গাড়িতে বসে কিভাবে আপনার গাড়ির গতি নির্ণয় করছে টেলিক্যামেরার মাধ্যমে।ফাসানোর কোন উপায় নেই।হাইওয়েতে গাড়ির গতিবেগ অনেক বেশী থাকে।সেখানে গাড়ি থামিয়ে কিংবা পুলিশ দাঁড়িয়ে গাড়ির গতিবেগ কন্ট্রোল করা সম্বন নয়।সেখেত্রে দেখুন এরা কিভাবে গাড়ির গতিবেগ কন্ট্রোল করছে।

গোল দাগ দেয়া লাল চিহ্নিত স্থানে টেলিক্যামেরা লাগানো আছে।অটোম্যাটিক রেকর্ড হচ্ছে প্রতিটি গাড়ির গতি।আপ্নি মনে মনে ভাবলেন আমি তো সেয়ানা পরেরবার এখান দিয়ে সাইকেলের গতিতে যাবো।কিন্তু ওরা আপনার চেয়েও বেশী চালাক।আজ যেখানে টেলিক্যামেরা দেখলেন কাল ওখানে নাও থাকতে পারে।হয়তো থাকবে ১০ কিলোমিটার আগে কিংবা পরে।্ধরা আপনাকে খেতেই হবে।আর টেলিক্যামেরা তো ২/১ টা না,শত শত আছে।কয়টাকে ফাঁকি দেবেন আপনি?
তাহলে বলুন কোনটা বেশী সহজ?আইন মেনে চলা না কি আইন অমান্য করে চলা? কার বাপের সাধ্যি আছে আইন অমান্য করে চলবে?
ধরাযাক রাস্তায় একটি এক্সিডেন্ট হয়েই গেছে।ফোন পাওয়া মাত্র সেখানে হাজির হবে পুলিশ,ফায়ার ব্রিগেড এবং এ্যাম্বুলেন্স।গন পিটুনীর ভয় নেই আর আপনাকেও বলতে হবে না এক্সিডেন্টের পিছনে কার দোষ,পুলিশই মাপজোক করে বের করে ফেলবে দোষটা কার ছিলো।দোষ যারই থাক গাড়ির ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দিতে বাধ্য থাকবে।

এখানে দেখা যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তিপক্ষ কি ভাবে ভিকটিমের সেবা যত্ন করছে।এক্ষেত্রে যদি ভিকটিমের জীবনহানীর আশংকা থাকে এবং তাকে দ্রুত বড় কোন হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন পড়েঙ্কিন্তু এ্যাম্বুলেন্সে নিলে অনেক দেড়ি হয়ে যাবে,সেক্ষেত্রে রয়েছে এয়ার এম্বুলেন্সের ব্যাবস্থা।যার ব্যায়ভার সরকার বহন করবে।

প্রয়োজনীয় দু'টি বিষয় আজকে শেয়ার করলাম।যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে পরবর্তীতে আরো কিছু দূর্লভ জিনিস আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো যা আপনাদের কাছে স্বপ্নের মত মনে হবে।যেমন শিক্ষা,প্রশাসন,কাজের নিশ্চয়তা,কাজ চলে গেলে সরকারি নিশ্চয়তা,গাড়ি-বাড়ি কেনা, ইত্যাদি।এটি কোন সফটওয়্যার নিয়ে টিউন নয় যে যা খুশী তাই লিখবো।এখানে যা লিখেছি তা বুঝে শুনে লিখেছি কারন অনেক ইতালি প্রবাসী ভাই এই টিউনটি পড়ছেন।মত বিরোধ থাকতে পারে কিন্তু ১০০% ভুল লেখার কোন অবকাশ নেই।
যদি আপনাদের ইউরোপ সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে হয় তবে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন আমি আরো লিখবো।মনে রাখবেন ইতালি তথা সমগ্র ইউরোপের আইন প্রায় একই।কাগজে/কলমে সীমান্তরেখা থাকলেও সমগ্র ইউরোপে কিন্তু বাস্তবে কোন সীমান্ত নেই।সমস্ত ইউরোপ মিলিয়েই একটা দেশ।যেমন সমস্ত ইউরোপ মিলিয়েই একক মুদ্রা ইউরো।আর আমরা?কতটুকু পিছিয়ে আছি বুঝতে পারছেন?এখনো আমাদের পার্শ্ববর্তীদেশ সীমানা লংঘনের দায়ে মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করে।পাখির কথা বলে ভুল করলাম কারন ইউরোপে পশু কিংবা পাখী হত্যাও (বিনা অনুমতিতে) কঠিনতম অপরাধ।তাহলে আমাদের অবস্থান কি পশু/পাখীর নীচে চলে গেছে?আর কত দিন আমরা ব্রিটিশদের বেঁধে দেয়া আইনে বোকা থাকবো?ব্রিটিশরা প্রায় ৭০ বছর আগে যা বলে গেছে তা আমরা মানবো আর কত দিন?উপমহাদেশের কি নিজস্ব কোন আইন নেই?বোকারা।
পরিশেষে বলতে চাই,আমি বিবর্তনে বিশ্বাস করি কিন্তু উল্টোভাবে।ডারউইন বলেছিলেন পশু থেকে মানুষের সৃষ্টি হয়েছিলো কিন্তু আমি বলতে চাই কথাটা ঠিক নয়--মানুষ থেকেই হিংস্র পশুর সৃষ্টি হচ্ছে।মানে মানুষ হয়ে যাচ্ছে পশু।
সকলের জন্য শুভ কামনা রইলো।ভালো থাকবেন সবাই ||| আল্লাহ হাফেজ |||

তাহলে কি আমাদের সরকার কি করছে??

কোন মন্তব্য নেই: